ফের বাংলাদেশে হিন্দু মন্দিরে লুটপাটের ঘটনা ঘটল। এবার ঘটনাটি ঘটেছে মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলায়। সেখানের শ্রী শ্রী গৌরাঙ্গ মহাপ্রভু সেবাশ্রম মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়। এরই সঙ্গে লুটপাটও চালানো হয়। এই ঘটনায় গাজিটেকা এলাকার বাসিন্দা হোসেন টিপুকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে বলে জানা গিয়েছে। এদিকে মন্দির কমিটির সভাপতি কৃপাসিন্ধু দত্তের অভিযোগ, ১ জানুয়ারি সকাল সকাল এই হোসেন টিপু 'হরে কৃষ্ণ' নাম জপতে জপতে মন্দিরে প্রবেশ করে। এরপর সে সেখানে উপাসনার ভান করে। তারপর বিগ্রহ ভাঙচুর শুরু করে। (আরও পড়ুন: নিরাপত্তা কোথায়? চট্টগ্রামে হিন্দু যুবককে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গেল মৌলবাদীরা)
আরও পড়ুন: চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিনের শুনানি কি আজ আদৌ হবে চট্টগ্রাম আদালতে? জল্পনা তুঙ্গে
এই ঘটনায় জখম হন পূজারি লীলা রানি দত্ত। লীলাদেবীকে অভিযুক্ত হোসেন ধাক্কা মেরে ফেলে দেয় বলে অভিযোগ। এরপর বিগ্রহ থেকে দামী গয়না খুলে নেয় হোসেন। প্রণামী বাক্স ভেঙে সেখান থেকে টাকাও নিয়ে নেয় সে। তাকে স্থানীয়রা আটকাতে এলে সে ইট ছুড়তে থাকে এবং বাইকে করে পালিয়ে যায়। পরে এই ঘটনা জানিয়ে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়। পরে পুলিশ অভিযুক্ত হোসেন টিপুকে গ্রেফতার করে। তার থেকে প্রণামী বাক্স থেকে চুরি করা ৩ হাজার ২২০ টাকা উদ্ধার করা হয়। এছাড়া রুপোর তৈরি দুই জোড়া নূপুর, দুটো হাতপাট্টা উদ্ধার করা হয়। (আরও পড়ুন: হাসিনাকে না পেলে ভারতের সাথে সম্পর্কে ছিন্ন? 'অন্য স্বার্থ' মনে পড়তেই ঢাকা বলল…)
এর আগেও সম্প্রতি বাংলাদেশের একাধিক মন্দিরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। গত ২১ ডিসেম্বর নাটোর সদর উপজেলার বড়হরিশপুরে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহাশ্মশানে হামলা চালিয়েছিল ডাকাতরা। সেই ঘটনায় এক সেবায়েতকে খুন করা হয় এবং লুটপাট চালানো হয়েছিল বলে অভিযোগ। নিহত সেবায়তের নাম তরুণ চন্দ্র দাস। এর আগে ১৯ এবং ২০ ডিসেম্বর ময়মনসিংয়ের হালুয়াঘাট উপজেলায় দুটি মন্দিরে হামলা চালানো হয়েছিল। ২০ তারিখ শাকুয়াই ইউনিয়নের বন্দেরপাড়া মন্দিরের দুটি মূর্তি ভাঙচুর করেছে দুষ্কৃতীরা। এদিকে ১৯ তারিখ বিলডোরা ইউনিয়নের একটি মন্দিরে মূর্তি ভাঙচুর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন হালুয়াঘাট থানার ওসি। ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, তিনি জানিয়েছেন যে সেই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আলালউদ্দিন নামে এক যুবককে (২৭) গ্রেফতার করা হয়েছিল। যুবক নিজের দোষ স্বীকার করে নিয়েছিল বলে দাবি করেছিলেন হালুয়াঘাট থানার ওসি।
তারও আগে গত ১৭ ডিসেম্বর দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার ঝাড়বাড়ি শ্মশান কালী মন্দিরের পাঁচটি মূর্তি ভাঙচুর করা হয়েছে। এদিকে সম্প্রতি ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে যে ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে হিন্দু-সহ সংখ্যালঘুদের উপর ২২০০টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। সেই পরিসংখ্যান অবশ্য মানতে চায়নি বাংলাদেশ সরকার। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুসের প্রেস উইংয়ের তরফে দাবি করা হয়েছে, অতিরঞ্জিত তথ্য পেশ করা হয়েছে। আর সংখ্য়ালঘুদের উপরে যে হামলার ঘটনা ঘটেছে, সেটা মূলত রাজনৈতিক। আর তারইমধ্যে পরপর হিন্দু মন্দিরে হামলা চালানোর ঘটনা সামনে আসছে বাংলাদেশ থেকে।