মমতার প্রশ্ন, ‘ভোটের আগে এমন কী ঘটল যে হঠাৎ করে হাজার হাজার মানুষের কার্ড ইচ্ছা মতো কেটে দেওয়া হচ্ছে? গরমেন্ট কি গায়ের জোরে চলে না কি? গরমেন্টকে তো কতগুলো আইন মেনে চলতে হয়। প্ল্যানিংটা কী ডিটেনশন ক্যাম্প তৈরি করা? অসমের মতো? স্পেশ্যালি অত্যাচার হচ্ছে তফশিলি ও সংখ্যালঘুদের ওপরে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আধার কার্ড বাতিল করে পশ্চিমবঙ্গে NRC লাগু করতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার। সোমবার নবান্নে এক সাংবাদিক বৈঠক করে এই আশঙ্কা প্রকাশ করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে মানুষের আধার নম্বর বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণ জানতে সোমবার সংশ্লিষ্ট দফতরের কলকাতার আধিকারিককে নবান্নে তলব করেছিলেন মুখ্যসচিব বিপি গোপালিকা। মুখ্যসচিব জানিয়েছেন, আধার কার্ড নিয়ামক সংস্থার ওই কর্তা জানিয়েছেন, ভারতে প্রবেশের পর নির্ধারিত সময়ের পরেও নিজেদের দেখে ফেরত না যাওয়ায় বন্ধ করা হয়েছে আধার কার্ডগুলি।
এদিন মমতা বলেন, ‘কারও নথি যাচাই না করেই আধার কার্ড বাতিল করে দেওয়া হচ্ছে। কেন কাটা হচ্ছে সে জানতে পারছে না। মানুষ নিজেকে খুব অসহায় ভাবছে। ভাবছে যে সুবিধাগুলো তারা ডায়রেক্ট ব্যাঙ্ক বেনিফিটের মধ্যে পায় সেগুলো আর পাবে না। এটা তো বিজেপির প্ল্যান নয়, ভোটের আগে NRC করা। এটা তো বিজেপির প্ল্যান নয় যে আগে মানুষের আধার কার্ডগুলো কেড়ে নিলাম তার পর বললাম আমি তোমাকে ক্যা দেব’।
মমতার প্রশ্ন, ‘ভোটের আগে এমন কী ঘটল যে হঠাৎ করে হাজার হাজার মানুষের কার্ড ইচ্ছা মতো কেটে দেওয়া হচ্ছে? গরমেন্ট কি গায়ের জোরে চলে না কি? গরমেন্টকে তো কতগুলো আইন মেনে চলতে হয়। প্ল্যানিংটা কী ডিটেনশন ক্যাম্প তৈরি করা? অসমের মতো? স্পেশ্যালি অত্যাচার হচ্ছে তফশিলি ও সংখ্যালঘুদের ওপরে। সব থেকে বেশি মতুয়াদের ওপর হচ্ছে। তাদের কার্ড গুলো ডিনোটিফাই করা হচ্ছে। নমঃসূদ্রদের করা হচ্ছে। এবং গরিব মানুষ। প্রত্যেকটা জেলায় করা হয়েছে। রাজ্য সরকার কিছু জানে না। গায়ের জোরে লুঠেরা গরমেন্ট সেন্ট্রালের জমিদারি কায়দায় জমিদারের মতো আচরণ করে। জমিদাররাও আগে এই ধরণের আচরণ করত না। কার্ড কেটে দেবেন তো করার দরকার কী ছিল? যখন করেছিলেন তখন আপনার কাছে ইনফরমেশন ছিল না’?
এদিন মুখ্যসচিব বলেন, আজ নবান্নে আধার সংস্থার কলকাতার কর্তাকে তলব করা হয়েছিল। তিনি আজই হাজিরা দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন আধার কার্ড বন্ধ করা হয়েছে দিল্লি বা বেঙ্গালুরু থেকে কার্ডগুলি বন্ধ করা হয়েছে। কিছু ব্যক্তি নির্ধারিত সময়ের পরেও ভারতে থেকে যাওয়ায় তাদের আধার কার্ড বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
ওদিকে এদিন দিল্লিতে এক সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘আধার কার্ড নিয়ে বেশ কিছু জেলায় বেশ কিছু সমস্যা হয়েছে। তাকে হাতিয়ার করে মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর সাঙ্গপাঙ্গরা সন্দেশখালি থেকে নজর ঘোরানোর চেষ্টা করছে। ভয় পাওয়ানোর চেষ্টা করছে। আমি রাজ্য বিজেপি সভাপতি হিসাবে পশ্চিমবঙ্গবাসীকে আশ্বস্ত করতে চাই, আমি রেলমন্ত্রী, তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী ও আধারের দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় সচিবের সঙ্গে কথা বলেছি। কারও বিন্দুমাত্র ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই। আজ রাতের মধ্যে সমস্ত তথাকথিত ডিঅ্যাক্টিভেটেড আধার কার্ড আবার চালু হয়ে যাবে। কোনও আধার কার্ড বাতিল হবে না’।