কিশোরী ছাত্রীকে 'গলা ভালো করার ওষুধ' খাওয়ানোর নাম করে আচ্ছন্ন করে ধর্ষণ! এমনই ভয়ঙ্কর অভিযোগ উঠেছে বছর ষাটেকের এক গানের মাস্টারের বিরুদ্ধে! জানা গিয়েছে, দিনের পর দিন একই ঘটনা ঘটার পর অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীটি বুঝতে পেরে যায়, তার উপর কী ভয়ঙ্কর অত্যাচার করা হয়েছে। তাতেই মনমরা হয়ে যায় মেয়েটি। শেষমেশ মায়ের কাছে ভেঙে পড়ে সে। সব জানায় মাকে। এরপরই কিশোরীর পরিবার থানায় অভিযোগ দায়ের করে। পুলিশ সেই কীর্তিমান বৃদ্ধ গানের মাস্টারকে ইতিমধ্য়েই গ্রেফতার করেছে।
ঘটনা প্রসঙ্গ জানা গিয়েছে 'নিগৃহীতা' কিশোরী পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর থানা এলাকার বাসিন্দা। ওই এলাকারই বাসিন্দা বনমালী বেরা। সে গানের শিক্ষক। তার কাছে নিয়মিত গান শিখতে যেত অষ্টম শ্রেণির ওই ছাত্রী। অভিযোগ, সেই সুযোগেই বনমালী মেয়েটিকে নানা ধরেনর ওষুধ খাওয়াত। তার দাবি ছিল, ওই ওষুধ খেলে তার গানের গলা আরও সুরেলা হবে।
সরল বিশ্বাসে কিশোরী সেই ওষুধ খেয়েও নিত। তারপরই অচৈতন্য হয়ে পড়ত সে। এরপরই বনমালী তাকে দিয়ে নিজের লালসা পূরণ করত। জানা গিয়েছে, বনমালীকে ওই আচ্ছন্ন করার ওষুধ এনে দিত গ্রামেরই মোড়ল জগদীশ জানা। সেও কখনও ওই কিশোরীকে সরাসরি নির্যাতন করেছে কিনা, সেটা অবশ্য জানা যায়নি।
তবে, বেশ কয়েকবার এমন ঘটনা ঘটার পর মেয়েটি বুঝতে পারে, আসলে গলা ভালো করার ওষুধ খাওয়ানোর নাম করে গানের মাস্টার তার সঙ্গে কী করছে! এরপরই মেয়েটি মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। বাড়িতে থাকলেও সে কারও সঙ্গে ভালো করে কথা বলছিল না। গুম হয়ে থাকছিল। বিষয়টি নজরে আসায় কিশোরীর মা তাকে নিয়ে বাপের বাড়ি চলে যান। সেখানেই মাকে সব খুলে বলে 'নির্যাতিতা'।
এরপর দাসপুরে ফিরেই কিশোরীর মা ও পরিবারের বাকি সদস্যরা বনমালীর বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। তার বিরুদ্ধে পকসো আইনের একাধিক ধারা-সহ অন্যান্য ফৌজদারি ধারাতেও মামলা রুজু করা হয়। পুলিশ বনমালীকে গ্রেফতার করে। রবিবার তাকে ঘাটাল আদালতে তোলা হলে বিচারক চারদিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।
এদিকে, ইতিমধ্য়েই বেপাত্তা হয়ে গিয়েছে গ্রামের মোড়ল জগদীশ। তার খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালানো হচ্ছে। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ, পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, প্রাথমিক তদন্তে বনমালীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সত্যতা সামনে এসেছে। তবে, তদন্ত এখনও চলছে।