রাশিয়া এবং ইউক্রেন যুদ্ধের আরও অবনতি। বন্দি বিনিময়ের মধ্যেই ইউক্রেন রুশ ড্রোন হামলায় কমপক্ষে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। রাশিয়া বাহিনী রাতারাতি ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে ৩৬৭টি ড্রোন এবং মিসাইল নিক্ষেপ করে, যা এই যুদ্ধের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় আকাশ হামলা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। কিয়েভ, খারকিভ, মাইকোলাইভ, টেরনোপিল এবং খমেলনিটস্কিতে এই হামলা হয়েছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার হামলার বিরুদ্ধে মুখ খোলার আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে। তাঁর অভিযোগ, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়া ও প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতি নরম মনোভাব দেখাচ্ছে।জেলেনস্কি টেলিগ্রামে লিখেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নীরবতা, বিশ্বের অন্যদের নীরবতা কেবল পুতিনকে উৎসাহিত করে। প্রতিটি রাশিয়ান জঙ্গি হামলা রাশিয়ার বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞার জন্য যথেষ্ট কারণ। তিনি যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলিকে রাশিয়ারউপর আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছেন।এদিকে ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইহোর ক্লেমেনকো বলেছেন, রাশিয়ার হামলায় ১২ জন নিহত ও ৬০ জন আহত হয়েছেন। এর আগে আঞ্চলিক কর্তৃপক্ষ ও উদ্ধারকারীরা আলাদাভাবে মৃতের সংখ্যা ১৩ জন বলে জানিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন-'ভোকাল ফর লোকাল...,' দেশ জুড়ে তুরস্ক বয়কটের আহ্বানের মাঝে বার্তা প্রধানমন্ত্রীর
এই হামলার ঘটনা এমন সময়ে ঘটল, যখন ইউক্রেন ও রাশিয়া তৃতীয় এবং শেষ দিনের বন্দি বিনিময়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই দফায় উভয় পক্ষই মোট এক হাজার জন করে বন্দি বিনিময় করবে। ইউক্রেন এবং ইউরোপীয় দেশগুলি মস্কোকে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির জন্য চাপ দিচ্ছে, যা তিন বছরের যুদ্ধ শেষ করার আলোচনার প্রথম পদক্ষেপ।তবে তাদের এই প্রচেষ্টা এই সপ্তাহের শুরুতে ধাক্কা খেয়েছে। কারণ, ট্রাম্প তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে রাজি না হওয়ায় মস্কোর ওপর আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে অস্বীকার করেন। কিন্তু কিয়েভ চেয়েছিল রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হোক।
ইউক্রেনের বিমানবাহিনী জানিয়েছে, রাশিয়া রাতভর হামলায় ২৯৮টি ড্রোন ও ৬৯টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। তবে তারা ২৬৬টি ড্রোন ও ৪৫টি ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করতে সক্ষম হয়েছে বলে জানিয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি ইউক্রেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভ, সেই সঙ্গে দক্ষিণের মাইকোলাইভ, পশ্চিমের টার্নোপিল-সহ বেশ কয়েকটি আঞ্চলিক কেন্দ্রে ছড়িয়ে পড়েছে। কিয়েভের সামরিক প্রশাসনের প্রধান তাইমুর তাকাচেঙ্কো বলেছেন, ড্রোন হামলায় ১১ জন আহত হয়েছেন। দুদিনের মধ্যে এটি দ্বিতীয় বড় বিমান হামলা। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় রাশিয়া রাতভর কিয়েভে কয়েক ডজন ড্রোন ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়।
আরও পড়ুন-'ভোকাল ফর লোকাল...,' দেশ জুড়ে তুরস্ক বয়কটের আহ্বানের মাঝে বার্তা প্রধানমন্ত্রীর
অন্যদিকে, রাশিয়া দাবি করেছে যে তারা মাত্র চার ঘণ্টার মধ্যে ৯৫টি ইউক্রেনীয় ড্রোন ধ্বংস করেছে, যার মধ্যে ১২টি মস্কোর কাছে আটকানো হয়েছে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই ড্রোনগুলি মস্কো এবং টভার অঞ্চলের উপর দিয়ে উড়ছিল। এই হামলা এমন সময়ে সংঘটিত হয়েছে যখন ইউক্রেন ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির জন্য চাপ দিচ্ছে, যা শান্তি আলোচনার পথ প্রশস্ত করতে পারে।