টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত দিল্লি-এনসিআর-এর জনজীবন। শনিবার সন্ধ্যা থেকেই দেশের রাজধানীতে লাল সতর্কতা জারি করেছে ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগ।রাস্তাঘাট যেমন জলমগ্ন, তেমনই ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিষেবাও বিঘ্নিত হয়েছে।এই পরিস্থিতিতে প্রবল ঝড় এবং বৃষ্টির ফলে দিল্লি বিমানবন্দরের ছাদের একটি অংশ ধসে পড়ে যায়। এই ঘটনায় তড়িঘড়ি পদক্ষেপ নিয়েছেন দিল্লি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।
ইতিমধ্যেই এই ঘটনার কয়েকটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। যেখানে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে যে, বিমানবন্দরের ১ নম্বর টার্মিনালের একটি অংশে ঝর ঝর করে জল পড়ছে উপর থেকে। বিমানবন্দরের কর্মীরা নিরুপায় হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন সেখানে।কিছুক্ষণের মধ্যেই হঠাৎ জলের তীব্রতা বেড়ে যায়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে ছাদের একটি অংশ। সেই সঙ্গে জলের ধারা নেমে আসে। জলে ভেসে যাওয়ার উপক্রম হয় চারিদিক। যদিও ভিডিওটির সত্যতা যাচাই করেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা।তবে দিল্লির মতো একটি বিমানবন্দরের এই অবস্থা দেখে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন যাত্রীরা। সেখানে এমন বিপর্যয় ঘটল কেন, কেমন নির্মাণ যে দুর্যোগে ভেঙে পড়ে, প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। দিল্লি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লিমিটেড-এর একজন মুখপাত্র বলেন, গত ২৪ মে রাতে দিল্লিতে তীব্র বজ্রপাতের সঙ্গে ভারী বৃষ্টি হয়। এই আকস্মিক বৃষ্টিপাতের ফলে বিমানবন্দর এবং এর আশেপাশে অস্থায়ীভাবে জল জমে যায়, যার ফলে কার্যক্রমে কিছুক্ষণের জন্য প্রভাব পড়ে...টার্মিনালের অন্যান্য অংশে কোনও কাঠামোগত আপস বা প্রভাব পড়েনি। স্বাভাবিক পরিস্থিতি পুনরুদ্ধারের জন্য গ্রাউন্ড টিমগুলি দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে, নিরাপত্তা এবং কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করেছে।'
আরও পড়ুন-'পাকিস্তানি সন্ত্রাসবাদী...,' বাহারিনে শাহবাজদের মুখোশ খুললেন ওয়াইসি
অন্যদিকে দিল্লি বিমানবন্দরের তরফে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ সামাল দেওয়ার জন্য বিশেষ ভাবে নির্মাণকার্য সম্পন্ন হয়েছিল, যাতে অতিরিক্ত জল জমতে না পারে। ১ নম্বর টার্মিনালের ছাদের অংশে প্রসারণযোগ্য পদার্থ বস্তু ব্যবহার করা হয়েছিল, যার মাধ্যমে বাড়তি জল নেমে এসেছে। নির্মাণের কোনও ক্ষতি হয়নি।বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের দাবি, ৭০-৮০ কিলোমিটার গতিতে ঝড় হচ্ছিল। ৮০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে একরাতে। অল্প সময়ের মধ্যে এত বড় বিপর্যয় নেমে আসাতেই জলবন্দি হতে হয়। সাময়িক বাধাবিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছিল।এদিকে, দুর্যোগের জেরে ৪৯টি বিমান দিল্লিতে নামতে পারেনি। ঘুরিয়ে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয় সেগুলিকে। ওই সমস্ত বিমানের মধ্যে ১৭টি আন্তর্জাতিক বিমানও ছিল।
শনিবার রাত থেকেই দিল্লির বেশ কয়েকটি অংশে প্রবল বৃষ্টিপাত হয়েছে। সঙ্গী ছিল ঝোড়ো হাওয়া। বেশ কয়েকটি জায়গা জল জমে বন্যার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। মোতি বাগ, মিন্টো রোড, দিল্লি ক্যান্টনমেন্ট, দীনদয়াল উপাধ্যায় মার্গের মতো জায়গায় সবচেয়ে বেশি জল জমেছে। মৌসব ভবন জানিয়েছে, শনিবার রাতে দিল্লিতে ঝড়ের গতি ছিল ঘণ্টায় ৮২ কিলোমিটার। রাত ১১টা বেজে ৩০ মিনিট থেকে ভোর ৫.৩০টা পর্যন্ত ছ’ঘণ্টায় ৮১.২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। রাতভর বৃষ্টিপাতের কারণে দিল্লির সঙ্গে বিমানবন্দরের সংযোগকারী প্রধান আন্ডারপাসে তীব্র জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। যার জেরে কয়েক ডজন যানবাহন ডুবে গিয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন-'পাকিস্তানি সন্ত্রাসবাদী...,' বাহারিনে শাহবাজদের মুখোশ খুললেন ওয়াইসি
শনিবার মৌসম ভবন দিল্লির সমস্ত অংশে ভারী বৃষ্টিপাত এবং ঝোড়ো বাতাসের পাশাপাশি লাল সতর্কতা জারি করার কয়েক ঘন্টা পরেই ব্যপক বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি হতে পারে। আবহাওয়া দফতরের লাল সতর্কতায় হরিয়ানা, পশ্চিম উত্তর প্রদেশ, রাজস্থান এবং দিল্লি-এনসিআরের কিছু অংশে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত এবং বজ্র হয়েছে।