'তুমি কেন মরছো না?' স্বামীর কথা শুনে ক্যামেরার সামনে তরুণীর আত্মহত্যার ঘটনায় গোলগোল পড়ে গিয়েছে উত্তরপ্রদেশে। মাত্র চার মাস আগেই বিয়ে হয়েছিল বছর তেইশের ওই তরুণীর।কিন্তু কয়েকদিনের মধ্যে শ্বশুরবাড়িতে অশান্তির মাত্রা এতটাই বেশি হয়ে উঠেছিল যে নিজেকে শেষই করে দিলেন তিনি। মৃত্যুর আগে স্বামী, শ্বশুর এবং ননদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ করেন ওই তরুণী।
জানা গেছে, আমরিন জাহান ছিলেন উত্তরপ্রদেশের মোরাদাবাদের বাসিন্দা। তাঁর স্বামী কর্মসূত্রে বেঙ্গালুরুতে থাকেন। সেখানে ওয়েল্ডারের কাজ করেন। তাই শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে মোরদাবাদে থাকতেন আমরিন জাহান। মৃত্যুর আগে তিনি তাঁর স্বামীর সঙ্গে ফোনে সমস্ত কথোপকথন রেকর্ড করে গিয়েছেন। মারা যাওয়ার আগে যে ভিডিও ওই তরুণী রেকর্ড করেছেন, সেখানে দেখা গিয়েছে তিনি অত্যন্ত উদ্বেগে রয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, 'আমার গর্ভপাতের পর শ্বশুরবাড়ির লোকেরা আমাকে নানাভাবে হেনস্থা করতেন। তরুণীর অভিযোগ তাঁর খাওয়া নিয়ে খোঁটা দিতেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এমনকি তাঁর ঘরের কারেন্ট সাপ্লাই পর্যন্ত বন্ধ করে দেওয়া হতো। শ্বশুর এবং ননদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ করেছেন ওই তরুণী।
আরও পড়ুন-ব্যাট দিয়ে মারধর, মাথা ন্যাড়া! মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নৃশংস হামলার শিকার ২ কিশোরী
তিনি আরও বলেন, 'আমার ননদ, আমার শ্বশুর আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী। আমার স্বামীও আংশিকভাবে দায়ী। সে আমাকে বোঝে না। সে মনে করে সবকিছুই আমার দোষ। তাঁর বাবা এবং বোন তার কানে সবসময় ফিসফিসিয়ে কথা বলত। আমি আর সহ্য করতে পারছি না। এমনকী আমাকে আমার স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকেরা মরতে বলেছিল। আমার স্বামী আমাকে প্রায়শই ফোনে জিজ্ঞাসা করত যে, 'তুমি কেন মরে যাও না?' আমার ননদ এবং শ্বশুরও একই কথা বলত।'
ভিডিওতে ওই তরুণী আরও বলেছেন যে, 'আমি যখন অসুস্থ ছিলাম, আমার শ্বশুরবাড়ির লোকজন আমাকে বলত, তাঁরা আমার চিকিৎসার খরচ বহন করতে পারবে না। এমনকী আমার পেছনে তাঁরা যে টাকা খরচ করেছিল, তারা আমাকে তা ফেরত দিতে বলেছিল। আমি কীভাবে তা করব? যদি আমার স্বামীর এত টাকা থাকত, তাহলে কি সে আমার কাছে ধার চাইত? আমার স্বামী বেঙ্গালুরুতে থাকে। আমার শ্বশুর এবং ননদ এখানে থাকেন। আমি জানি না আমি মারা গেলে কী হবে, তবে আমি এখনকার চেয়ে ভালো থাকব।'
আরও পড়ুন-ব্যাট দিয়ে মারধর, মাথা ন্যাড়া! মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নৃশংস হামলার শিকার ২ কিশোরী
ইতিমধ্যে পুলিশ আমরিনের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। তার বাবা সেলিম পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছেন। যেখানে তিনি বলেছেন, আমরিন গতকাল তাঁকে ফোন করে কেঁদেছিলেন। জানিয়েছিল যে, তাঁর উপর নির্যাতন করা হচ্ছে। তাকে বাঁচানোর কথাও বলেছিল।এরপর তিনি যখন আমরিনের বাড়িতে ছুটে যান। কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ।এদিকে, সেলিমের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।