গত ২০২৪ সালের ৫ অগস্ট বাংলাদেশে ছাত্র-গণ অভ্যুত্থানের পর সেই দুপুরের মধ্যেই বাংলাদেশ ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর সেদেশের শাসনভার যায় অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে। আমেরিকা থেকে বাংলাদেশে আসেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ মহম্মদ ইউনুস। রাতারাতি চলে শপথ পাঠ। এরপর যমুনা দিয়ে বহু জল গড়িয়েছে। ভারতে আশ্রয় নেন শেখ হাসিনা, বাংলাদেশে একাধিক অভিযোগে অভিযুক্ত শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরাতে মরিয়া চেষ্টা চালায় ঢাকা। তবে প্রশ্ন হল, বাংলাদেশের মাটি ছেড়ে শেখ হাসিনার চলে যাওয়ার ১ বছরের মধ্যেও কি সাধারণ নির্বাচন আয়োজন করতে পারবে ঢাকা?
হাসিনার বাংলাদেশ ছাড়ার ৫ অগস্টের পর আরও এক ৫ অগস্ট আসতে চলল। প্রশ্ন উঠছে, মহম্মদ ইউনুসের ক্ষমতাধীন বাংলাদেশে এই সময়ের মধ্যেও কি ভোট হওয়া সম্ভব? এই বিষয়ে 'দি ইকোনমিস্ট'-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে মহম্মদ ইউনুস অবস্থান স্পষ্ট করেন। প্রতিবেদন অনুসারে মহম্মদ ইউনুস বলেন, বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার মূল্যস্ফীতি ও ব্যাংক খাতকে স্থিতিশীল রাখতে সক্ষম হয়েছে। তিনি বলেন, তবে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এখনো দুর্বল। একই সঙ্গে রাজনৈতিক পরিস্থিতিও ভঙ্গুর রয়েছে। বিপ্লবের ৯ মাস পরও বড় পরিবর্তন আনা কঠিন হয়ে পড়েছে। প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, মহম্মদ ইউনুস বলেন,' ঐক্যে পৌঁছানো সহজ ব্যাপার নয়। কোন কোন কমিশন থাকা উচিত, তা নিয়েই রাজনৈতিক দল ও জনগণের মধ্যে মতপার্থক্য শুরুতেই রয়েছে।' নির্বাচনের পথ প্রশস্ত করার বিষয়ে তিনি বলেন,' ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে মিলে ‘জুলাই সনদ’ প্রণয়ন করবে, যা নির্বাচন অনুষ্ঠানের পথ খুলে দেবে এবং একটি ‘নতুন বাংলাদেশ’ গঠনে সহায়তা করবে।' সেই রিপোর্টেই উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা বলছেন, চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসে বাংলাদেশে হতে পারে ভোট। তবে ২০২৬ সালের জুনের পর সাধারণ নির্বাচন সেদেশে হওয়ার সম্ভাবনা নেই। সেক্ষেত্রে কার্যত তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার ১ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ সাধারণ নির্বাচন করতে পারছে না।
ইতিমধ্যেই বাংলাদেশে নিষিদ্ধ হয়েছে সেদেশের জন্মলগ্ন থেকে থাকা রাজনৈতিক দল আওয়ামি লিগ। শেখ হাসিনার এই দলের রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন স্থগিত করেছে বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন। দেশের তাবড় আওয়ামি লিগ নেতাদের অমেকেকই গ্রেফতার করেছে ইউনুস প্রশাসন। তাঁদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ, মামলা। এই পরিস্থিতিতে সেদেশে বহু রাজনৈতিক দলের প্রশ্ন ভোটের দিনক্ষণ নিয়ে। সেই প্রেক্ষাপটেই এল ইউনুসের এই বার্তা।