কাশ্মীরে সাধারণ মানুষের উপরও গোলাগুলি চালিয়েছিল পাকিস্তান। তাই সেখানকার নাগরিকরা কেমন আছে সেটা জানতে প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনদিনের সফরে জম্মু ও কাশ্মীরের নানা এলাকা পরিদর্শনে করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের ওই প্রতিনিধিদলের সদস্যরা। সেখানে স্থানীয় মানুষজনের সঙ্গে কথা বলেছেন ডেরেক–মানসরা। গোটা পরিস্থিতিও খতিয়ে দেখেন তাঁরা। এবার সেই সফর শেষে বাংলায় ফিরে এসে তাঁরা কাশ্মীর নিয়ে পূর্ণাঙ্গ একটি রিপোর্ট জমা দেবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। আগামী মঙ্গলবার তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন রিপোর্ট জমা দেবেন। ডেরেকের নেতৃত্বে কাশ্মীর সফরে গিয়েছিলেন রাজ্যসভার সাংসদ নাদিমুল হক, মমতাবালা ঠাকুর, সাগরিকা ঘোষ এবং রাজ্যের সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া।
এদিকে এই রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর পরবর্তী পদক্ষেপ কেমন হবে সেটা ঠিক করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই। কেন্দ্রীয় সরকারকেও এই রিপোর্ট পাঠাতে পারেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বলে সূত্রের খবর। কাশ্মীরের স্থানীয় জনতা, পর্যটন ব্যবসায়ী, নানা পেশার মানুষজন সকলের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। পাকিস্তানি সেনার গোলাগুলিতে সেখানকার ১৭ জনের প্রাণ গিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে স্থানীয় মানুষজনের বাড়িও। কাশ্মীরের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লার সঙ্গে অনেকক্ষণ বৈঠক করেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধিদলের সদস্যরা। সে সবই বিস্তারিত উল্লেখ করে রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে মুখ্যমন্ত্রী কাছে। তৃণমূল কংগ্রেসই একমাত্র দল, যারা নিজেদের প্রতিনিধিদল পাঠিয়ে কাশ্মীরের অবস্থা জেনেছে।
আরও পড়ুন: ‘সিঁদুরধারিণীদের লড়াই করা উচিত ছিল’, বিজেপি সাংসদের মন্তব্যে বিতর্ক, প্রতিবাদ চন্দ্রিমার
অন্যদিকে শনিবার বেশি রাতে মুখ্যমন্ত্রী সোশ্যাল মিডিয়ায় কাশ্মীরে পাঠানো ওই প্রতিনিধিদলকে বার্তা দিয়ে লেখেন, ‘আমি আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ আমাদের পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদলের প্রতি, যারা সম্প্রতি সীমান্তবর্তী জেলা পুঞ্চ এবং রাজৌরী সফর করেছে। যে সব এলাকা সীমান্তপারের গোলাগুলির জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রতিনিধিরা শোকাহত পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন, তাঁদের দুঃখে সামিল হন এবং এই গভীর বেদনার সময়ে সান্ত্বনা–সহানুভূতি দেন। প্রতিনিধিদলটি রাজৌরীর সরকারি মেডিক্যাল কলেজও পরিদর্শন করেছে, যেখানে আহতরা চিকিৎসাধীন রয়েছেন। প্রতিনিধিদলের সদস্যরা চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং তাঁদের সেবার জন্য গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।’
আসলে পহেলগাঁও হামলার পর পর্যটন পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। আতঙ্কে অনেকেই সফর বাতিল করেছেন। আর কাশ্মীরিদের জীবনে নেমে এসেছে অন্ধকার। একদিকে আর্থিক ক্ষতি মেনে নিতে হচ্ছে অপরদিকে পাকিস্তানের গোলাগুলিতে আহত, ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয়েছে। এই আবহে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, ‘সঙ্কটের সময়ে মানুষের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন সহানুভূতির স্পর্শ এবং আমাদের প্রতিনিধিদল ঠিক সেই মানবিক স্পর্শটাই তুলে ধরেছে। যার জন্য আমি গভীর ভাবে কৃতজ্ঞ। এই উদ্যোগ আমাদের সম্মিলিত প্রতিশ্রুতিকে আবারও নিশ্চিত করে। যে প্রতিশ্রুতি বলে, আমরা, জনপ্রতিনিধিরা, সবসময় মানুষের পাশে থাকব।’